লুটপাটের ধারা অব্যাহত রাখতেই আওয়ামী লীগ ক্ষমতার সোনার হরিণ ছাড়তে নারাজ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সাধারণ মানুষের মাঝে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনীতে এ মন্তব্য করেন তিনি।

এসময় রিজভী বলেন, প্রতিটি সংসদীয় এলাকায় এমপিরাজ তৈরি করেছে ক্ষমতাসীনরা। উপজেলা পরিষদেও ডামি নির্বাচনের পাঁয়তারা চলছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি’র এই সিনিয়র নেতা।

রিজভী বলেছেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে রেশনিং ব্যবস্থা তুলে নিয়েছিলেন। আজকে দেশের অর্থনীতিকে লুটতরাজ করে ভঙ্গুর করে ফেলেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার। তিনি বলেন, প্রতিদিন দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলছে। আদা, রসুন ও পেঁয়াজ ডলারের দামে আমদানি করতে হচ্ছে। মানুষ পেটভরে ভাত খেতে পারছে না। আজকে সন্তান বিক্রি করে পেট চালাতে হচ্ছে।

রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী এখন আবার ডামি উপজেলা নির্বাচন করতে যাচ্ছেন। আজকে সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতারাও সুযোগ পাচ্ছেন না। মন্ত্রী-এমপিদের ভাই, শালা, ভাগিনা, ভায়রাদের কারণে জিম্মি স্থানীয় জনগণ। প্রতিটি সংসদীয় এলাকায় এমপিরাজ তৈরি হয়েছে। তাও ডামি এমপি। আজকে ডামি এমপির স্ত্রী, শ্যালক, ভাই দিয়ে সৃষ্টি করা হচ্ছে এমপিরাজ। এমপি রাজত্বের কারণে জিম্মি গোটা এলাকা।

তিনি বলেন, আমাদের বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানীরা বারবার বলেছেন, কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবেন না, কিন্তু গণবিরোধী প্রধানমন্ত্রী গণবিরোধী প্রজেক্ট করেছেন। বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা গলাচিপা, বাউফলে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করছে।

রিজভী বলেন, ফরিদপুরে ছাত্রলীগের সভাপতির কাছে দুই হাজার কোটি টাকা, সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর ভাই নাকি ১৫ হাজার কোটি টাকা অর্জন করেছে। এই আলাদীনের চেরাগ কই থেকে আসলো। কানাডা, দুবাই, মালয়েশিয়া এত বাড়ি-ঘরের মালিক কীভাবে হলেন? একসময় আজিমপুর কবরস্থানে যেতে হবে সেটা তারা ভুলে গেছেন।

ওবায়দুল কাদের প্রসঙ্গে রিজভী আরও বলেন, সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চেয়েছেন বিএনপির কর্মসূচির দিন কেন আপনারা পাল্টা কর্মসূচি দেন? তিনি বললেন, বিএনপিকে মানসিকভাবে বাধা দেওয়ার জন্য আমরা পাল্টা কর্মসূচি দেই। এতেই প্রমাণিত হয় যে, ওবায়দুল কাদেরের মানসিক সমস্যা রয়েছে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম বলেন, সারাদেশ আগুনে পুড়ছে, মানুষ অভুক্ত আছে। আর প্রধানমন্ত্রী বলে কোনো অসুবিধা নেই। মানুষ খুব ভালো আছে। জনগণের কোনো কষ্টই তাদের গায়ে লাগে না। কারণ, সাধারণ মানুষকে তাদের চোখে পড়ে না। তিনি শুধু দেখেন মুজিব কোট। আজকে এক টাকার কাজ করা হচ্ছে একশ টাকায়। বাকি ৯৯ টাকা খরচ হয় মুজিব কোটের পেছনে।

মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু বলেন, সরকারের সবাই এসিতে ঘুমান তাই জনগণের কষ্ট তাদের উপলব্ধি হয় না। এরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, তাই মানুষের কষ্টে এদের কিছু আসে যায় না। এদের লক্ষ্য শুধু বিএনপিকে দমন করা আর লুটপাট করা। তাই এ থেকে জাতিকে রক্ষা করতে হলে প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক, সহ-অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহবায়ক মো. মোহন, হাজী মনির হোসেন, সদস্য দপ্তরের দায়িত্বে সাইদুর রহমান মিন্টু প্রমুখ।